😎 পানি থেরাপি, রসুনের পেস্ট আর স্টকের খুঁটিনাটি ✨🧄✨

কি খবর? সব ভালো চলছে?? 😊

আদার গল্পে বলেছিলাম সামনে রসুন নিয়ে মানে রসুনের পেস্ট নিয়ে গল্প হবে।

মনে আছে?

আজকে রসুনের পালা। 🥰

রেগুলার রান্নায়, রসুন বেঁটে নেয়া বা গ্রেট করা বা ব্লেন্ড করা যেমনই হোক, যত মিহি হয় তত ভালো। রসুনপ্রীতি না থাকলে, আধা ভাঙ্গা বা আস্ত রসুনে কামড় লাগলে সেটা খুব সুখকর ঘটনা নয়। মাছমাংসের গন্ধ অ্যাডজাস্ট করতে, তরকারির ঝোলকে গাঢ় করতে, স্বাদ বাড়াতে আবার রসুন না হলে চলে না! 😐

আদার মত, রসুনও পেস্ট করে রাখতে পারলে রোজকার রান্না আর একটু সহজ হয়ে আসে।

একসময় রোজ রসুন রেডি করে নেয়া লাগলেও এখন যদি সুযোগ থাকে সহজ করে নেয়ার, চেষ্টা তো করাই যায়।

বেসিক রান্নাবাড়ি এ পর্যন্ত যা কিছু আমরা করছি, তাতে রসুনের মিহি পেস্ট ফরম্যাটটাই দরকার পড়ছে। সবসময়। তাই আমাদের জন্য, বেশি করে বানায় রাখা খুব কাজে দিচ্ছে। 🥰 🥰

শেয়ার করছি যাতে আগ্রহী কেউ থাকলে সেও ট্রাই করে দেখতে পারে। 😉

রসুন ছিলতে দাঁত, নখ, ছুরি কোনটাই বাদ দেই নাই। সহজ কোন উপায় কি নাই? প্রশ্নটা রসুনের সামনে পড়লেই মানে ছিলবার সময় মনে ঘুরঘুর করতো। এরকম আরও কেউ আছে নাকি? 🤔

তবে সমাধান করতে পারছি ঐ প্রশ্নটার। জানি কিন্তু কাজ করবে না ভেবে ট্রাই করি নাই, রিভিউ পাই নাই কারও কাছে এমন কেউ থাকলে অপেক্ষা শেষ করবার সময় আসছে বলতে পারি। 🥳

Photo by Tijana Drndarski on Unsplash

শুরুতে বলে নেই, রসুনের বেলাতেও দেশি ছোট রসুনগুলো আর গাবদা গোবদা বড় রসুনের মধ্যে স্বাদে বা ঝাঁজে তেমন ফারাক লাগে নাই। দেশি রসুনের কোয়া ছিলতে ছিলতে চুল পেকে যেতে পারে। তাই গাবদা গোবদা রসুনই ভালো। নির্দ্বিধায় পছন্দ করতে পারেন।

আর যদি দেশি রসুনই প্রিফার করেন, ওগুলো পানিতে ভিজিয়ে রেখে ছিলবার আইডিয়াটা অন্তত ট্রাই করে দেখতে পারেন। পানি থেরাপি! ✨

এখানে বড়গুলো নিয়ে বলছি।

বাজার থেকে হাফ কেজি বা ১ কেজি বা তার বেশি পরিমাণে রসুন আনলেন। ফ্যামিলির সাইজ, নিজেরা কি পরিমাণে খান এসব বুঝে আর কি! রসুন এনেই প্রেপ করতে বসতে হবে তেমন তাড়া নাই। কয়েকদিন ভালোই থাকে। আস্তে ধীরেই আগাতে পারেন। 😊

আমাদের এখানে আবার তেলাপোকার উৎপাত আছে, তাই আমরা এনে ২-১ দিনের মধ্যেই কাজ সেরে ফেলতে ট্রাই করি। আর আনিও এমনভাবে যখন স্টোর করে রাখা পেস্ট প্রায় শেষ হতে নেয়।

রসুন এড়ায় নিয়ে সবগুলো কোয়া আলাদা করে ফেলতে হবে। এবার ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি দিয়ে কোয়াগুলো ভিজিয়ে রাখতে হবে। চাইলে নরমাল পানিতেও ভেজানো যায়। দুটোই কাজ করে। পানিতে ভিজিয়ে রাখলে, ১-২ ঘণ্টা পরে চেক করলেই দেখা যাবে রসুনের কোয়া থেকে খোসা আলগা আলগা হয়ে গেছে। 🥳 🥳

পানিতেই থাকুক। এবার খোসা ছাড়ানোর কাজে লেগে পড়া যাক। পানি থেরাপিতে খোসা খুব সহজেই ছেড়ে আসে। নখ দিয়ে আর খুঁটতে হবে না, নখের ক্ষতি হবে না, ছুরিও লাগবে না, দাঁত দিয়েও গুতোগুতি করতে হবে না। 🥰

আগে সবগুলোর খোসা ছাড়ায় নেবেন নাকি কতগুলো ছাড়াবেন আর সাথে সাথে টুকরাও করে ফেলবেন নাকি পরে সব একসাথে টুকরা করবেন- যেমন খুশি পছন্দমত স্টেপ ফলো করতে পারেন।

খোসা ছাড়ানো হয়ে গেলে, বাকি প্রসেসটা আদার মত। বড় কোয়াগুলো ৪ টুকরো করে নিলেই হবে। ছোটগুলা যখন হাতে পড়বে, ঐগুলা কাটার দরকার নাই। কারণ ঐগুলা ছোটই আছে। 😉

একদিনে সব স্টেপ করা পসিবল না হলে প্রবলেম নাই। যেদিন আমরা টুকরা করলাম, ঐদিন পারলে ভালো। নাইলে পরে ব্লেন্ড করতে চাইলে, পানি দিয়ে ভিজিয়ে ফ্রিজের নরমাল সেকশনে রাখা যাবে। ভিজিয়ে রাখা পানি ব্লেন্ড করবার সময় ব্যবহার করা যাবে। ভিজিয়ে রাখায় রসুন নরম থাকবে। ব্লেন্ড করতে সহজ হবে। সহজে পেস্ট ভার্শন পাওয়া যাবে। ইয়েপ্পি! 😎😎

আমরা ব্লেন্ড করি। তাই ব্লেন্ডিং করা নিয়ে ভালো বলতে পারতেছি। পাটায় পিষতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলে, পাটায়ও পিষে নেয়া যাবে।

ব্লেন্ড করা হলে, এবার গুছিয়ে রাখবার পালা। আদার মতই, খানিকটা আমরা নরমালে রাখব যাতে ইনস্ট্যান্ট ইউজ করতে পারি। আর বাকিটা একটা শক্ত তবে খুলতে সহজ এমন ঢাকনাসহ ডিব্বায় তুলবো আমরা। চারকোণা ডিব্বা হলে বেস্ট, ফ্রিজের জায়গা কম খাবে। গোল হলে জায়গা একটু বেশি লাগবে এই যাহ্‌!

পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, আদা নিয়ে গল্পেও ডিব্বা নিয়ে বলেছি। আবার বলি কারণ এটা খুবই দরকারি পয়েন্ট। তাই বারবার মনে করায় দেই।

আমাদের রসুনের স্টক। ডিব্বা ভর্তি হ্যাপিনেস! 🥰 🥰

ডিব্বা লোড করা শেষে, ডিপে মানে এটাও ফ্রিজার সেকশনে রেখে দেই। আমাদের রসুনের স্টকের ছবিই শেয়ার করেছি এখানে। নরমালের পেস্টটুকু ফুরায় আসতে নিলে, ডিপের ডিব্বা বের করে ঠাণ্ডা ছাড়ায় নেই আর নতুন করে লোড করে নেই।

স্টক ফের ডিপে ফেরত। এভাবে চলতে থাকে। 💚

পেস্ট করা শেষ! তুলে রাখা শেষ!! এবার যেগুলো ধোয়ার বাসনকোসন বের হইছে, সেগুলো ধুয়ে ফেলি। ধুয়ে ফেললেই নিশ্চিন্তি। এখন একটু রেস্ট নেয়া যেতে পারে। 😎

গুনে গুনে ট্র্যাক না রাখলেও, হাফ কেজি রসুনের পেস্টে, আমাদের অনেক দিন যায় বলতে পারি। আর পানি থেরাপি রসুন ছিলবার বোরিং কাজটাকে অনেক মজার করে দিয়েছে। 🎊

ওহ! পানি নাড়াচাড়ায় হাতের অবস্থা একটু মলিন লাগতে পারে, রাফ লাগতে পারে। দিনের শেষে পানি নাড়াচাড়া ফাইনালি যখন আর করা লাগবে না, তখন হাতের যত্ন নিতে ভুলবেন না।

বাহারি আয়োজন লাগবে না। একটুখানি অলিভ অয়েল যথেষ্ট। বা পছন্দের অন্য কোন লোশন হতে পারে। হাতগুলো সারাদিন কত কিছুতে হেল্প করে। একটু যত্ন তো ওরা পেতেই পারে। 💕