🥰 আজকে কেবল আদা নিয়ে কথা হবে___

আদা পেস্ট করা নিয়ে কথা আসলে। তা, আদা কেন পেস্ট করবো???

নিয়ম করে যাদের রোজ রান্না করা লাগে, বিশেষ করে আমাদের বাসায় পেঁয়াজ, মরিচ, আদা, রসুন এগুলোর প্রয়োজন লেগেই থাকে। রোজ সবকিছু শূন্য থেকে শুরু করা তেমন সুবিধার অপশন নয়। আদা পেস্ট করে, বেশি করে বানায় রাখা রোজকার বেশ খানিকটা মুশকিল আসান করে দেয়। ✨

মাছ, মাংস, সবজির কোন স্পেশাল আইটেম হোক, আদা-রসুন লাগবেই। চান্সে বলে রাখি রসুন নিয়ে আলাদা স্টোরি সামনে হবে। 🧄

চামচ দিয়ে ছিলে নিতে বেশ আরাম।

শুকনা রাখা যায় তবে তাতে করে কিছুটা নষ্ট হবার চান্স ১৬ আনাই থাকে। সময় যত যায়, আদা শুটকি হতে থাকে। ফেলে দিতে হয়। আদার আসল ফ্লেভারটা আর পাওয়া যায় না। আবার কম করে আনলে, ফুরালেই বাজারে দৌড় দিতে হয়। 😞

তাই বলি কি, ফ্রিজ তো মোটের উপর সব ফ্যামিলি বাসাতেই থাকে। পেস্ট ফরম্যাটে একবার রেখে দেখতে পারেন। 🥰

গাবদা গোবদা আদা, চামচ সাথে নিয়ে পরের স্টেপের জন্য রেডি 😎

আদা ছিলবার সহজ কোন উপায় আছে কি?

আছে। আদা ছিলবার জন্য ছুরি বা বটির থেকে চামচ ভালো অপশন। পেস্ট করে রাখেন বা না রাখেন, ছিলবার এই টেকনিক অন্তত ট্রাই করে দেখতে পারেন। খুবই কাজের। আর শুধু আমরা বলছি না। এই টেকনিক ঘর সামাল দিতে এসে, খুঁজতে যেয়ে শেখা। আমরা আগে ছুরি বা বটি ব্যবহার করলেও ঠিক খুশি হতে পারতেছিলাম না। চামচ দিয়ে করবার পর এখন এটাই কন্টিনিউ করছি।

চামচ দিয়ে চেঁছে নিলে আদার প্রায় সবটুকুই ব্যবহার করা যায়। ফেলনা যায় না বললেই চলে। 😌

বাজারে থাকা দেশি ছোট আদা বলেন আর গাবদা গোবদা বিদেশি আদা বলেন, ঝাঁজে তেমন তফাত আমরা পাই না। আমরা গাবদা গোবদা আদাই আনি। চামচ দিয়ে ছিলে নিতে বেশ আরাম। ✨

পেস্ট বানানোর প্রসেসটা ?

খোসাগুলো চেঁছে নেবার পর, পরিষ্কার করে ধুয়ে, পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।

ধুয়ে নেবার পর আদাগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে। একেবারে কুচি নয়, ছোট কিউব কিউব টুকরা। ব্লেন্ড করতে এরকম ছোট টুকরা করে নিলে ব্লেন্ডারের উপর চাপ কম পড়ে। আস্ত ব্লেন্ড করতে যেয়ে ব্লেন্ডার ভাঙলে পরে আমরা কিন্তু নাই। 🤪

ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নেয়া যায় অথবা পাটায় বাঁটতে এক্সপার্ট হলে বেঁটে নেয়া যায়। পাটায় বাঁটতে হলে আদা টুকরা করা লাগবে কিনা জানা নেই। করবার অভিজ্ঞতা হয় নি।

আমরা ব্লেন্ডার প্রিফার করি সহজ লাগে বলে। পাঠক নিজের পরিবেশ মত, যা আছে যেমন, গ্রেটার, শিল-পাটা চাই তো এসবও ব্যবহার করতে পারেন। হেল্প করবার মত কেউ থাকলে তার সাহায্যও নিতে পারেন। আমরা আপাতত নিজেরাই এসব করতে শিখতেছি তাই ব্লেন্ডারই ভরসা। 🤓

সম্ভব হলে টুকরাগুলো, অল্প পানিতে ঘণ্টা দুই তিনেকের জন্য ভিজিয়ে রাখতে পারেন। পানিতে একেবারে ডুবিয়ে না, টুকরার ফাঁকে ফাঁকে পানির ঝলক দেখতে পেলেই চলবে। আদা বেশ নরম হবে এ সময়ের মধ্যে। ব্লেন্ডার ফ্রেন্ডলি করার চেষ্টা আর কি!

প্রয়োজনে মিশিয়ে নেয়া যায় বা আলাদাও ব্যবহার করবার অপশন ওপেন থাকে।

অপেক্ষা করতে না চাইলে স্কিপ করে, সাথে সাথেই পেস্ট বানানো শুরু করতে পারেন। পেস্ট বানানোর সময় লাগলে পানি যোগ করুন। আদা ভিজিয়ে রাখা পানিটুকু ফেলে না দিয়ে ব্লেন্ডের সময় ব্যবহার করুন। আরও লাগতে পারে তাই হাতের কাছে পানি রাখতে পারেন।

জরুরি কথা- পেস্ট বানাতে বসবার প্রিপারেশন হিসেবে চামচ, বাটি, পানির বোতল বা গ্লাসে পানি, যে ডিব্বায় পেস্ট রাখা হবে সে ডিব্বা, মুছবার কাপড় যদি পানিটানি পড়ে তো মোছা লাগতে পারে এসব হাতের কাছে নিয়ে বসবেন। মেশিন লাইন পেয়েছে কিনা চেক করে নেয়া, ব্লেন্ডারের পাত্র পরিষ্কার আছে কিনা চেক করে নেয়া, লিক হয় কিনা চেক করে নেয়া এসব দেখে এরপর শুরু করুন। ✔️✔️✔️

আদা পেস্ট তো হল, এখন এত আদার পেস্ট সামাল দিবো কিভাবে? একদিনে তো সব ফুরাবে না!

ডিব্বা ভর্তি জমাট বাঁধা আদা পেস্ট। এখান থেকে প্রয়োজনমত রিফিল করে নেই আমরা 😎

পেঁয়াজের স্টোরিতে বলেছিলাম। এখানেও বলি, শক্তপোক্ত ঢাকনাসহ ডিব্বা লাগবে। ফ্রিজারে রাখতে ডিব্বা লাগবে।

পেস্টের কিছুটা নরমালে রাখি নিয়মিত ব্যবহার করবার জন্য। আর বাকিটা ফ্রিজারে বা ডিপে রেখে নিশ্চিন্ত থাকুন। ফ্রিজারে জমে থাকবে তাই নষ্ট যেহেতু হয় না, পুরো আদাই ব্যবহারের জন্য পাওয়া যায়। 🥳 🥳

রিফিল প্রসেস- নরমালে রাখা পেস্ট শেষ হতে নিলে, ফ্রিজার বা ডিপ থেকে আদার ডিব্বা বের করে, রেখে দিন। ঠাণ্ডা ছাড়লে, মানে জমাট থেকে পেস্ট ফরম্যাটে আসলে রিফিল করে নিন। আবার বাকিটা ফ্রিজারে বা ডিপে ফেরত।

করতেই হবে তা বলছি না। আমরা যে আইডিয়াটা কাজে লাগিয়েছি তা শেয়ার করি। দুই ভাগ থাকে এরকম হরেক রকমের ডিব্বা বাজারে সবসময় পাওয়া যায়। এমনকি বাসায় খুঁজলেও দেখা যাবে বাসাতেই আছে। নরমালে এরকম একটা ডিব্বার এক ভাগে আদা, আরেক ভাগে রসুন একসাথে রাখা গেলে ভালো। 😃

অনেক সময় শুধু আদা অথবা রসুন দরকার লাগতে পারে। এক ডিব্বায় দুই ভাগে রাখলেই চলে যায়। প্রয়োজনে মিশিয়ে নেয়া যায় বা আলাদাও ব্যবহার করবার অপশন ওপেন থাকে। একসাথে মিশিয়ে রাখবার দরকার নেই।

আরও তো কত কিছু খেয়াল রাখতে হয়। এই প্রসেস কি ফ্লেক্সিবল?

হ্যাঁ, ফ্লেক্সিবল আছে। একদিনে ব্লেন্ড করে রাখা সম্ভব না হলে, টুকরো করে অল্প পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখা স্টেপ পর্যন্ত করে নরমালে রাখি। ৩-৪ দিন অব্দি ঠিকঠাক থাকে। প্লাস চেক করে দেখে নেবার সুযোগ তো থাকছেই। পরের দিন ব্লেন্ড করে নিন। আমরা একবার ৩দিন পর্যন্ত রেখেও ঠিকঠাক মতই পেস্ট বানাইতে পারছিলাম। অসুবিধা হয় না।

শেষ করি। ধোয়ার জন্য কিছু বাটিঘটি বের হবে। সেগুলো ধুয়ে পানি ঝরাতে দিন। শুকায় গেলে যেটা যেখানে থাকে, জায়গায় ফেরত রাখুন। 😎 😎

লেখা কেমন লাগলো? মনে ধরলে, আরও ভালো হয় যদি কাজে লাগে, এখানে হাত তালি দেয়া যায়, দিতে পারেন। শেয়ার করতে পারেন। আর কমেন্টেও আপনার রেস্পন্স জানাতে পারেন। 🥰

💕 হ্যাপি ঘর সামলান্তি 💕💕