🍀 গুণাগুণ ঠিক রেখে ধনে পাতা কি লম্বা সময় স্টোর করে রাখা সম্ভব?! আজকে সেটাই জানবো। 💚

ধনে পাতার আঁটি এনে, পুরোটুকুই বাঁচায় রাখা নিয়ে প্রবলেম ফেইস করেছেন এমন অনেকেই থাকার কথা। ভালোই প্রবলেম ফেইস করা লাগে। আম্মাকেও দেখতাম এই জিনিস অনেকখানি থাকতেই নষ্ট হয়ে যাওয়াতে ফেলে দিত। বা আনাই হতো না। ভর্তা খেতে ইচ্ছা করলে, তখন সেদিন এনে দুই একদিনেই কাজ সেরে ফেলা হতো। 😐

নিজেরাও, ফ্রিজের নরমাল সেকশনে, ধনে পাতা রেখে পরে, পাতাগুলো পচে গেছে আর ফেলে দিছি এরকমই বেশি হইছে। 😶

নেটে খুঁজতে যেয়ে এই ছবিটাই মনে ধরছে 🥰 🥰

তবে যদি বলি ফ্রিজেরই ফ্রিজার সেকশনে ডিফারেন্ট রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব?! ফ্রিজেই এটার খুবই ভালো একটা সমাধান করা যায়। তবে এখানে প্রসেসটা ডিফারেন্ট হতে যাচ্ছে। সেটাই আজকের গল্প। 😉

ভর্তা খাবার প্ল্যান থাকলে, যেদিন করতে চান, তার ১ বা ২ দিন আগে এনে রাখা যেতে পারে। তবে ভর্তা তো আর সব দিন খাওয়া হয় না। ভর্তা দিবস বাদে বাকি দিনগুলার কি গতি হবে?! 🤔

আগেই বলে রাখি, রেগুলার রান্নায় ব্যবহারের জন্য এই তরিকা খুবই কাজে দেয়। এত সাধের ধনে পাতা একগাদা নষ্টও হয় না। পয়সা পুরোটাই উসুল! 🤓

বাজার থেকে ধনে পাতা আনবার পরপরই এগুলো প্রসেস করে ফেলতে পারলে ভালো। অথবা কিছুক্ষণের জন্য চাইলে নরমালে তুলে রাখা যায়। বাইরে রাখলেও ৩-৪ ঘণ্টার মত ফ্রেশ থাকে। কারণ অনেক সময় হাতে আর্জেন্ট অন্য কাজ চলে আসে যা তখনি করবার জন্য যাওয়া লাগতে পারে। আবার বাজার থেকে এসে খানিকটা রেস্ট তো লাগে। যাই হোক, বাজার থেকে ধনে পাতা আনলাম। ✨🍀✨

এখন যখন প্রসেস শুরু করব, তখন গাছের গোঁড়াগুলো থেকে ডগাসহই পাতাগুলো বেছে নিতে হবে। কিছু হলদে পাতা বা পচা ডগা থাকতে পারে। সেগুলো ফেলে সুন্দরমত বেছে নিতে হবে। বাছবো আর হাত দিয়ে ছিঁড়ে টুকরা করবো। প্রথম প্রথম পাতাগুলো, ডগাগুলো কাটতাম। তবে এখন হাতে শিফট করেছি। এগুলো এতটাই ফ্রেশ থাকে যে হাত দিয়েই টুকরা করা যায়। 😊

একেবারে কুচি করে রাখি না। একটু বড় রেখেই ছিঁড়ে রাখি। ধোয়ার সময় ছোট টুকরা হারায় কম। ফ্রেশ ধনে পাতা নাড়াচাড়া করার মজাই অন্য রকম। সব শেষেও হাতে ঘ্রাণ লেগে থাকে! 💚

বাছাই, টুকরা করা শেষ হলে ধুয়ে নেবার পালা। ভালমত ধুয়ে পানি ঝরিয়ে ফেলি। খুব করে কচলে নেয়ার দরকার নাই। আলতো করে কচলে পানি ঝরিয়ে আর একটা বাটিতে রাখি।

ধোয়ার সময় ২টা বাটি একসাথে রাখতে পারলে ভালো কাজে দেয়। একটাতে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে আরেকটাতে পরিষ্কার পাতা নেয়া যায়। এভাবে ২-৩ বার ধুয়ে নেয়া ভালো। প্রথমবারেই ময়লা সব ধুয়ে যায় বললেই চলে। পরের ২ বারের ধোয়া সেটাই ভালমত কনফার্ম করার জন্য করা। ✨✨

এরপর যে ডিব্বায় রাখব, তা একবার ধুয়ে নেয়া ভালো। পরিষ্কার থাকলেও। ঢাকনা ভালমত এঁটে থাকে কিন্তু খুলতে গেলে পেইন খেতে হয় না এমন ডিব্বা যোগাড় করতে পারলে অতি উত্তম। আগেও বলেছি। ডিব্বা সেট আপ করা হলে এবার পাতায় ফেরত আসি। ধুয়ে রাখা পাতা, ডগা সব এখন লোড করবো। 😎

ডিব্বা ভর্তি হয়ে গেলে ঢাকনা লাগিয়ে, এটা যাবে ডিপে বা ফ্রিজার সেকশনে। ডিপেই রেখে ব্যবহার করা যাবে। আগে বেরও করে রাখবার প্রয়োজন নেই। 🥰

আমাদের ফ্রোজেন করা ধনে পাতার ছবি 😎

ধনে পাতাতে ঠাণ্ডা খুব দ্রুত ছাড়ে। তাই যখন প্রয়োজন তখন বের করে নিলেই হবে। 🥳

আর ধুয়ে রাখার কারণ হল- একবার বরফে জমাট বাঁধলে ধনে পাতা বা যেকোনো শাক (সামনের লেখার টপিক 😎 ) পানি ছাড়ে খুব তাড়াতাড়ি। তাই আগেই ধুয়ে নেয়া। কারণ পরে ধুয়ে নেয়ার মত অবস্থায় থাকে না। সরাসরি ব্যবহার করা যাবে এমন করে রাখলে রান্নার কাজটাও সহজ হল। 🥰

জমাট বাঁধা ধনে পাতা চাইলে হাত দিয়েই পরিমাণমত ছাড়িয়ে নেয়া যায়। নাইলে হাতে ঠাণ্ডা না লাগাতে চাইলে ছুরি দিয়ে সাইড থেকে কেটে নেয়া যায়। ফুরিয়ে যখন আসতে নেয়, তখন ডিব্বা ধুয়ে ডিব্বার গায়ে লেগে থাকা টুকরাগুলাও নেয়া যায়! 🤩

ফ্রিজ বা ফ্রিজার পরিষ্কার করতে নিলে ভেতরের সব জিনিসপত্র তো বের করে নিতে হয়। পরিষ্কার করা শেষে রাখবার সময় জিনিসগুলোর ঠাণ্ডা ছেড়ে যায় কিছুটা। ঠাণ্ডা ছেড়ে আবার জমাট বাঁধা- ধনে পাতাগুলো এই ঘটনায় পড়লে আরও কম্প্যাক্ট হয়ে যায়। তবে গুণাগুণ ঠিকঠাক থাকে। ✨✨

নরমালে রাখলে যে ধনে পাতা অনেকখানিই পচে যেত, তা পুরোপুরি এড়ানো যায়। ধনে পাতার দাম বেশি না। আঁটিতে থাকে অনেকগুলো করে। তবুও নষ্ট তো নষ্টই। নষ্ট হলে সেটা খাবার উপযোগী তো আর থাকলো না। 😭

ধনে পাতার ভর্তার ফ্যান নই। রেগুলার রান্নায় যেমন মসুরের ডালে তো দেবই আর অন্য কোন তরকারীতে ইচ্ছে করলে ধনে পাতা দেই। জমায় রাখার এই উপায় পাবার আগে খুব তাড়াতাড়ি ফুরায় ফেলতে হবে এরকম চাপ কাজ করতো। আবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যেত বলে মাঝে মাঝে ইচ্ছে থাকলেও তরকারীতে দেয়া স্কিপ করতাম। ডাল হয়তো রাঁধতেই অনীহা কাজ করতো। শুধু ধনে পাতার জন্য বাজারে যাওয়া মুশকিল। আবার বাজারে কম করে দিতে বললে দিতে চায় না। দিয়ে দেয় বেশি করে। 😶😶

আসলে বেশি না, রাখতে পারতাম না তাই অতটুকুই বেশি মনে হত। এখন আর অত টেনশন নাই। নিজেই বেশি দিতে বলি আর মনে মনে হাসি! 🤪